মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন

সব দোকানে মিলছে না নতুন দরের সয়াবিন

স্টাফ রিপোর্টার,ই-কণ্ঠটোয়েন্টিফোর ডটকম॥ খুচরা বাজারে নতুন দরের সয়াবিন তেলের সরবরাহ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। কিছু দোকানে নতুন দরের সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও অনেক জায়গায় আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে। যেসব দোকানে নতুন দরে বিক্রি হচ্ছে তারা বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা লিটারেই বিক্রি করছেন। আর যেখানে নতুন দরের সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না তারা ১৯৫-১৯৮ টাকা লিটার বিক্রি করছেন। যদিও গত ১৮ জুলাই থেকে নতুন দর কার্যকর করার কথা বলেছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। কিন্তু এতদিন নানা অজুহাতে খুচরা দোকানগুলোতে নতুন দরের সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। তাই বাড়তি মূল্যেই বিক্রি হয়ে আসছিল সয়াবিন তেল। তবে গতকাল থেকে বাজারের কিছু দোকানে কম মূল্যে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সোমবার রাজধানীর বাসাবো, মাদারটেক, মিরপুর-১, শ্যামলী ও আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজারসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকান ঘুরে দেখা যায়, নতুন দর অনুযায়ী কিছু দোকানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা। এ ছাড়া নতুন দর অনুযায়ী ২ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকা ও ৫ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৯১০ টাকায়। অন্যদিকে দাম কমানোর পর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৬ টাকায়।

আর যেখানে আগের দরে মজুত করা তেল রয়েছে তারা প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন ১৯৫-১৯৮ টাকা। এ ছাড়া ২ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৩৯০-৩৯৮ টাকা আর ৫ লিটার ৯৫০-৯৭০ টাকায় বিক্রি করছে।

বিক্রেতারা জানান, নতুন দাম ঘোষণা হলেও খুচরা বাজার পর্যন্ত সেই তেল আসতে কয়েকদিন সময় লাগে। এজন্য ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তারা কম দামে বিক্রি করতে পারেন না। হঠাৎ করে দাম কমিয়ে দিলে তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। নতুর দর অনুযায়ী সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা কমানো হলেও তাতে স্বস্তি পাচ্ছেন না ক্রেতারা। তাছাড়া নতুন দর ঘোষণার প্রায় এক সপ্তাহ পরেও সব দোকানে কম মূল্যে সয়াবিন তেল না পেয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন তারা। ক্রেতারা বলেন, সয়াবিন তেলের দাম এখনো অনেক বেশি। এই দাম আরও কমানো উচিত। রাজধানীর মাদারটেক বাজারের হক স্টোরের রাফি বলেন, এতদিন কম দামের তেল আসে নাই। আজ কোম্পানি দিয়ে গেছে। আমরাও কম দামে বিক্রি করছি। রাফি এন্টারপ্রাইজের আরিয়ান বলেন, আমরা দাম কমিয়ে বিক্রি করছি। ডিলাররাও আমাদেরকে কম দামে মাল দিচ্ছে। কিছু তেলের বোতলে আগের গায়ের রেটই আছে। কিন্তু আমরা নতুন দর অনুযায়ী ১৮৫ টাকা লিটারেই বিক্রি করছি। শ্যামলী কাজী অফিস এলাকার খুচরা দোকান মৌসুমি স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোশাররফ হোসেন বলেন, বাজারে নতুন রেটের সয়াবিন তেল এসেছে। আমার কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে এখন তেল রয়েছে। সরকারি রেটে ১ লিটার বোতলের তেল ১৮৫ টাকা ও ৫ লিটার বোতলের তেল ৯১০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে মানুষ চাচ্ছে সয়াবিনের দাম যেন আরও কমে।

এদিকে আগের দরে সয়াবিন তেল বিক্রি করা আব্দুল কুদ্দুস নামের এক বিক্রেতা বলেন, ডিলাররা আমাদের এখনো কম দামে তেল দেয় নাই। দোকানে যে তেল আছে তা বেশি দামে ক্রয় করা। আর বোতলের গায়ে যেই দাম আছে সেই দামেই তো বিক্রি করছি। নতুন তেল আসলে দাম কমে যাবে। জিনিয়া স্টোরের এক দোকানি বলেন, নতুন দামের মাল আসে নাই। কালকে আসতে পারে। আসলে দাম কমিয়ে দেবো। ইমন নামের এক বিক্রেতা বলেন, আমার দোকানে এখনো আগের অল্প কিছু তেল রয়েছে। এগুলো শেষ হলেই অর্ডার দেবো।

কল্যাণপুরের বাসিন্দা নাহিন বিন মাহমুদ বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেকদিন ধরেই কমতে শুরু করেছে। আমাদের দেশে অনেক দেরি করে কমেছে। তবে এই দাম আরও কমানো দরকার। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সয়াবিনের দাম কমানোটা অব্যাহত রাখার জন্য আমি সরকারের নিকট আহ্বান জানাই।

মিরপুর-১ নম্বর বাজারে তেল কিনতে এসেছেন স্বাধীন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে তো বাজারে সয়াবিন তেল পাওয়া দুষ্কর হয়ে গিয়েছিল। তখন আমরা বাসায় সরিষার তেল খাওয়া শুরু করেছিলাম। এখন বাজারে সয়াবিনের তেল থাকলেও আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় তা অনেক নগণ্য। দাম না কমলে মানুষ সরিষার বা অন্যান্য তেলের দিকে ঝুঁকবে। তাই বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশেও দাম কমানো অব্যাহত রাখলে আমরা বউ-ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com